রশ্মি কাকে বলে: গণিতে রশ্মি (Ray) হল রেখার এমন এক ধরণের অংশ যার কেবলমাত্র একটি প্রান্তবিন্দু রয়েছে। অর্থাৎ রশ্মি একটি বিন্দু থেকে উৎপন্ন হয়ে অসীম পর্যন্ত চলতে থাকে। অন্যভাবে বলতে পারি, রশ্মি হল কোনো বস্তুর একেবারে সোজা চলার পথ যা একটি বিন্দু থেকে উৎপন্ন হয়ে অসীম পর্যন্ত চলতে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি রাতের অন্ধকারে একটি টর্চলাইট খোলা আকাশের দিকে মুখ করে জ্বালানো হয়। তবে আমরা দেখতে পাব টর্চের আলো অসীম খোলা আকাশের দিকে চলে যাচ্ছে। এখন একটু ভেবে দেখুন এই আলো টর্চ থেকে শুরু হয়েছে কিন্তু অসীম আকাশের দিকে ছুটে যাচ্ছে , কোথায় যাচ্ছে ,কত দূরে যাচ্ছে তা আমরা বলতে পারব না।
অর্থাৎ, টর্চ হল একটি নির্দিষ্ট প্রান্তবিন্দু যেখান থেকে আলো উৎপন্ন হয়েছে এবং অসীম মহাকাশ হল আলোর চলার পথ যার কোনো শেষ নেই।
সুতরাং, খোলা আকাশের দিকে টর্চের আলো ছোড়া একটি র্রশ্মির অন্যতম উদাহরণ।
রশ্মি কাকে বলে – রশ্মির বৈশিষ্ট্য ও চিত্রসহ সংজ্ঞা।
আজকের টিউটোরিয়ালে আমরা রশ্মি কাকে বলে, রশ্মির বৈশিষ্ট্য, রেখা ও রশ্মির তুলনা এবং রশ্মি সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। তাই ছাত্রছাত্রীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ তারা যেন এই টিউটোরিয়ালটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ে।
এই টিউটোরিয়ালটি সম্পূর্ণ পড়ার পর শিক্ষার্থীরা রশ্মি কি ও রশ্মি কাকে বলে তা ব্যাখ্যা করতে পারবে, রেখা ও রশ্মির মধ্যে তুলনা করতে পারবে এবং রশ্মির বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে পারবে।
রশ্মি কাকে বলে?
রশ্মির সংজ্ঞা বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে দিয়ে থাকে। নিম্নে রশ্মির কিছু সংজ্ঞা তুলে ধরা হল –
যদি কোন রেখাংশের একটি প্রান্তবিন্দুর অবস্থান ঠিক রেখে অপর প্রান্তবিন্দুটি ইচ্ছেমত বাড়ানো যায়,তবে তাকে রশ্মি (Ray)বলে।
যার একটি প্রান্ত বিন্দু আছে, কিন্তু নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য নেই, তাকে রশ্মি বলে।
যে সরলরেখার শুরুর বিন্দু আছে কিন্তু শেষ বিন্দু নেই তাকে রশ্মি বলে।
অন্যভাবে বলতে পারি, রশ্মি হল কোনো বস্তুর একেবারে সোজা চলার পথ যা একটি বিন্দু থেকে উৎপন্ন হয়ে অসীম পর্যন্ত চলতে থাকে।
উপরে বর্ণিত প্রতিটি সংজ্ঞা সঠিক, এর মধ্যে যে কোন একটি মনে রাখলেই হবে।
প্রদত্ত চিত্রে OP একটি রশ্মি যার O প্রান্তটি নির্দিষ্ট এবং OP সরলরেখাটিকে P বিন্দুর ডানদিকে বর্ধিত করা হয়েছে। এখানে O বিন্দুটি হল OP রশ্মির প্রান্তবিন্দু বা শীর্ষবিন্দু।
রশ্মির বৈশিষ্ট্য
জ্যামিতিতে রশ্মির অসংখ্য ব্যবহার রয়েছে। তাই রশ্মির সংজ্ঞার পাশাপাশি রশ্মির বৈশিষ্ট্যগুলিও ভালোভাবে জানতে হবে। নিম্নে রশ্মির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হল –
- রশ্মির শুরু (starting point ) আছে কিন্তু শেষ (End point ) নেই।
- রশ্মির দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যায় না।
- খাতা কলমে রশ্মি অঙ্কন করা সম্ভব নয়।
- রশ্মির কেবলমাত্র দৈর্ঘ্য আছে কিন্তু প্রস্থ বা উচ্চতা নেই। সুতরাং রশ্মির মাত্রা একটি।
- রশ্মির প্রান্তবিন্দুর সংখ্যা একটি।
- দুটি রশ্মির প্রান্তবিন্দু মিলিত হয়ে কোণ উৎপন্ন করে।
- প্রান্তবিন্দুর দিকে রশ্মিকে বৃদ্ধি করা যায় না কিন্ত তির্যক দিকে রশ্মিকে অসীম পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায়।
রেখা ও রশ্মির পার্থক্য
নিম্নে একটি ছকের মাধ্যমে রেখা ও রশ্মির পার্থক্য তুলে ধরা হল –
রেখা | রশ্মি |
রেখার শুরু ও শেষ নেই। | রশ্মির শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। |
রেখার চিত্র অঙ্কন করার সময় উভয় পাশে তীর চিহ্ন বসানো হয়। | রশ্মির চিত্র অঙ্কন করার সময় একপাশে তীরচিহ্ন বসানো হয়। |
রেখার কোনো প্রান্তবিন্দু নেই। | রশ্মির প্রান্তবিন্দুর সংখ্যা একটি। |
অনির্দিষ্ঠ দৈর্ঘ বোঝাতে রেখা ব্যবহার করা হয়। | নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে শুরু করে অনির্দিষ্ঠ দৈর্ঘ্য বোঝাতে রশ্মি ব্যবহার করা হয়। |
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ রশ্মি বলতে কি বোঝায়?
উত্তরঃ যখন কোনো সরলরেখার একটি প্রান্ত নির্দিষ্ট থাকে এবং অপর প্রান্তকে খুশিমতো বর্ধিত করা যায় তখন তাকে আমরা রশ্মি বলি।
প্রশ্নঃ রশ্মির প্রান্ত বিন্দু কয়টি?
উত্তরঃ রশ্মির প্রান্তবিন্দুর সংখ্যা ১টি।
আশাকরি রশ্মি কাকে বলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর ভালোভাবে বুঝতে পেরেছো রশ্মি কি এবং খুব সহজে রশ্মির সংজ্ঞা, রশ্মির বৈশিষ্ট্য এবং রশ্মি ও রেখার মধ্যে তুলনা করতে পারবে। তারপর ও যদি কোনো সমস্যা হয় তবে অবশই কমেন্ট করে জানাবে। ধন্যবাদ। …….
আরও পড়ুনঃ