সমতুল্য ভগ্নাংশ কাকে বলে: সমতুল্য ভগ্নাংশগুলি এমন এক ধরণের ভগ্নাংশ যে ভগ্নাংশগুলির লব ও হর আলাদা হয়। কিন্তু এদের কে লঘিষ্ঠ আকারে প্রকাশ করে এদের মান সমান পাওয়া যায়।
উদাহরণস্বরূপ, ৯/১২ এবং ১৮/২৪ দুটি আলাদা আলাদা লব ও হর বিশিষ্ট্য দুটি ভগ্নাংশ। ৯/১৮ এবং ১৮/২৪ ভগ্নাংশ দুটিকে লঘিষ্ট আকারে প্রকাশ করলে প্রতিক্ষেত্রে মান ৩/৪ পাওয়া যায়। সুতরাং, ৯/১২ এবং ১৮/২৪ ভগ্নাংশদুটি ৩/৪ এর সমতুল্য ভগ্নাংশ।
কোনো ভগ্নাংশের সমতুল ভগ্নাংশ বের করার জন্য ওই ভগ্নাংশের লব ও হর কে একই সংখ্যা দিয়ে গুণ অথবা ভাগ করতে হয়।
প্রশ্নঃ ১/২ এর সমতুল্য ভগ্নাংশ নির্ণয় করো?
উত্তরঃ ১/২ এর সমতুল্য ভগ্নাংশ বের করার জন্য ১/২ এর লব ও হর কে যথাক্রমে ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭,.. ইত্যাদি সংখ্যা দিয়ে গুন্ করতে হবে।
- ১/২ এর লব ও হর কে ২ দিয়ে গুণ করে পাই ২/৪,
- ১/২ এর লব ও হর কে ৩ দিয়ে গুণ করে পাই ৩/৬,
- ১/২ এর লব ও হর কে ৪ দিয়ে গুণ করে পাই ৪/৮,
- ১/২ এর লব ও হর কে ৫ দিয়ে গুণ করে পাই ৫/১০,
- ১/২ এর লব ও হর কে ৬ দিয়ে গুণ করে পাই ৬/১২,…. ইত্যাদি।
সুতরাং, ১/২ এর সমতুল্য ভগ্নাংশগুলি হল – ২/৪, ৩/৬, ৪/৮, ৫/১০, ৬/১২,…. ইত্যাদি। এখন থেকে স্পষ্টরূপে বোঝা যাচ্ছে, সমতুল্য ভগ্নাংশের সংখ্যা অসংখ্য।
সমতুল্য ভগ্নাংশ কাকে বলে – সমতুল্য ভগ্নাংশ বের করার নিয়ম ?
আজকের টিউটোরিয়ালে আমরা সমতুল্য ভগ্নাংশ কাকে বলে এবং কোনো ভগ্নাংশের সমতুল্য ভগ্নাংশ কিভাবে নির্ণয় করতে হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করবো।
সমতুল্য ভগ্নাংশ কি?
সমতুল্য ভগ্নাংশের ইংরেজি হল equivalent fraction. যদি দুই বা দুই এর বেশি ভগ্নাংশকে লঘিষ্ঠ আকারে প্রকাশ করার পর ভগ্নাংশগুলির মান সমান হয়, তবে সেই ভগ্নাংশগুলিকে আমরা সমতুল ভগ্নাংশ বলে থাকি।
উদাহরণস্বরূপ, ১/৩ এর সমতুল্য ভগ্নাংশগুলি হল – ২/৬, ৩/৯, ৪/১২, ৫/১৫, ৬/১৮, ৭/২১,.. ইত্যাদি। এই ভগ্নাংশগুলিকে লঘিষ্ঠ আকারে প্রকাশ করলে প্রতিক্ষেত্রে একই মান ১/৩ পাওয়া যাবে।
সমতুল্য ভগ্নাংশ কাকে বলে?
সমতুল ভগ্নাংশের সংজ্ঞা বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে দিয়ে থাকে। নিম্নে সমতুল্য ভগ্নাংশের সংজ্ঞা তুলে ধরা হল –
দুই বা ততোধিক ভগ্নাংশের মান সমান হলে, তাদের সমতুল্য ভগ্নাংশ বলা হয়।
অন্যভাবে বলতে পারি, সমতুল্য ভগ্নাংশ এমন এক প্রকারের ভগ্নাংশ যার মান একই কিন্তু লব এবং হর ভিন্ন মানের হতে পারে। অর্থাৎ একটি সমতুল্য ভগ্নাংশ প্রদত্ত ভগ্নাংশের একই অনুপাতকে নির্দেশ করে।
যদি দুই বা দুই এর বেশি ভগ্নাংশকে লঘিষ্ঠ আকারে প্রকাশ করার পর ভগ্নাংশগুলির মান সমান হয়, তবে সেই ভগ্নাংশগুলিকে সমতুল্য ভগ্নাংশ বলা হয়।
সমতুল্য ভগ্নাংশের উদাহরণ
সমতুল্য ভগ্নাংশের কিছু উদাহরণ নিম্নে তুলে ধরা হল –
- ২/৫ এর সমতুল ভগ্নাংশগুলি হল – ৪/১০, ৬/১৫, ৮/২০, ১০/২৫,… ইত্যাদি।
- ৩/৫ এর সমতুল্য ভগ্নাংশগুলি হল – ৬/১০, ৯/১৫, ১২/২০, ১৫/২৫, ১৮/৩০,…. ইত্যাদি।
- ২/৭ এর সমতুল্য ভগ্নাংশ গুলি হল- ৪/১৪, ৬/২১, ৮/২৮, ১০/৩৫, ১২/৪২, ১৪/৪৯,… ইত্যাদি।
- ৫/৭ এর সমতুল্য ভগ্নাংশ গুলি হল – ১০/১৪, ১৫/২১, ২০/২৮, ২৫/৩৫, ৩০/৪২,… ইত্যাদি।
- ৮/৫ এর সমতুল ভগ্নাংশগুলি হল – ১৬/১০, ২৪/১৫, ৩২/২০, ৪০/২৫, ৪৮/৩০,.. ইত্যাদি।
সমতুল্য ভগ্নাংশ বের করার নিয়ম?
কোনো ভগ্নাংশের সমতুল্য ভগ্নাংশ নির্ণয় করার জন্য ওই ভগ্নাংশের লব ও হর কে একই সংখ্যা দিয়ে গুণ ও ভাগ করতে হয়।
প্রশ্নঃ ৬/৭ এর সমতুল্য ভগ্নাংশ নির্ণয় করো?
উত্তরঃ ৬/৭ এর সমতুল্য ভগ্নাংশ বের করার জন্য ৬/৭ এর লব ও হর কে যথাক্রমে ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭,.. ইত্যাদি সংখ্যা দিয়ে গুন্ করতে হবে।
- ৬/৭ এর লব ও হর কে ২ দিয়ে গুণ করে পাই ১২/১৪,
- ৬/৭ এর লব ও হর কে ৩ দিয়ে গুণ করে পাই ১৮/২১,
- ৬/৭ এর লব ও হর কে ৪ দিয়ে গুণ করে পাই ২৪/২৮,
- ৬/৭ এর লব ও হর কে ৫ দিয়ে গুণ করে পাই ৩০/৩৫,
- ৬/৭ এর লব ও হর কে ৬ দিয়ে গুণ করে পাই ৩৬/৪২,…. ইত্যাদি।
সুতরাং, ৬/৭ এর সমতুল্য ভগ্নাংশগুলি হল – ১২/১৪, ১৮/২১, ২৪/২৮, ৩০/৩৫, ৩৬/৪২,…. ইত্যাদি। এখন থেকে স্পষ্টরূপে বোঝা যাচ্ছে, সমতুল্য ভগ্নাংশের সংখ্যা অসংখ্য।
ভগ্নাংশের লব ও হর কে একই সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে ও সমতুল্য ভগ্নাংশ নির্ণয় করা যায়। কিন্তু তোমরা গুণ করেই সমতুল্য ভগ্নাংশ নির্ণয় করবে।
আশাকরি সমতুল্য ভগ্নাংশ কাকে বলে এবং সমতুল্য ভগ্নাংশ বের করার নিয়ম নিবন্ধটি পড়ে, ভালোভাবে বুঝতে পেরেছো সমতুল ভগ্নাংশ কি এবং যেকোনো সংখ্যার সমতুল্য ভগ্নাংশ নির্ণয় করতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ