স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে – Natural Numbers in Bengali

স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Number) কি – স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে : স্বাভাবিক সংখ্যা, সংখ্যা পদ্ধতির অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।স্বাভাবিক সংখ্যার বিস্তার 1 থেকে শুরু করে অসীম পর্যন্ত অর্থাৎ স্বাভাবিক সংখ্যা 1 থেকে শুরু করে Infinity পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতেই থাকে। যেমন – 1,2,3,4,5,….. ∞.

স্বাভাবিক সংখ্যাকে ইংরেজিতে Natural Number বলা হয়। অনেকে স্বাভাবিক সংখ্যাকে প্রাকৃতিক সংখ্যা ও বলে থাকে।

Natural Numbers কে Counting Number ও বলা হয়ে থাকে, কারন একে আমরা গণনার কাজে ব্যবহার করে থাকি। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, যে কোন বস্তু গণনা আমরা সর্বদা 1, 2,….. থেকেই শুরু করি এবং ∞ পর্যন্ত চলতে থাকি। যেমন – 1 টি আম, 2 টি আম, তিনটি আম,….ইত্যাদি।

স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে – বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার?

স্বাভাবিক সংখ্যা কি ?

স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক সংখ্যাগুলি 0 ব্যতীত সমস্ত পূর্ণ সংখ্যার একটি সেটকে নির্দেশ করে৷ এই সংখ্যাগুলি আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং কথাবার্তায় উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ বিশেষ করে বস্তু গণনা করার জন্য, তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য, সময় বলা ইত্যাদির জন্য। এই সংখ্যাগুলিকে ‘প্রাকৃতিক সংখ্যা’ বা স্বাভাবিক সংখ্যা বলা হয়।

উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি – আমরা বস্তু গণনার সময় বলে থাকি ১টি আম , ১০ কলা, ১৫টি গরু ইত্যাদি , তাপমাত্রা পরিমাপের সময় বলে থাকি আজকের তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ,আগামিকাল তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থাকবে ইত্যাদি এবং সময় বলার সময় বলি এখন সকাল ৮ টা বাজে , আমার বাড়ি ফিরতে রাত ১০ টা বাজবে।

এখানে আমরা গণণার জন্য ১, ১০, ১৫ তিনটি সংখ্যা ,তাপমাত্রা বোঝানোর জন্য ৩২, ৩৩ দুটি সংখ্যা এবং সময় বোঝানোর জন্য ৮ এবং ১০ দুটো সংখ্যা ব্যবহার করেছি। এই ১ , ১০, ১৫, ৩২, ৩৩, সংখ্যাগুলোকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলা হয়ে থাকে।

এখন আমরা বলতে পারি – গণনা করার জন্য, তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য, সময় বলা ইত্যাদির জন্য যে সংখ্যাগুলি ব্যবহার করা হয় ,তাদের ‘প্রাকৃতিক সংখ্যা’ বা স্বাভাবিক সংখ্যা বলা হয়।

আরও পড়ুন : অংক কাকে বলে – অংক কত প্রকার ও কি কি ?

স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে ?

স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে এর উত্তর বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে দিয়ে থাকে। নিম্নে স্বাভাবিক সংখ্যার কিছু সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো –

১ থেকে শুরু করে পর পর ১ যোগ করে যে সংখ্যার দল পাওয়া যায় , তাদের স্বাভাবিক সংখ্যা বলা হয়। যেমন : ১, (১+১) = ২, (২+১) =৩, (৩+১)=৪ ,…..ইত্যাদি।

যে সকল সংখ্যাকে গণনার জন্য ব্যবহার করা হয় ,তাদের স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। যেমন : ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১,….. ইত্যাদি।

স্বাভাবিক সংখ্যার উদাহরণ

স্বাভাবিক সংখ্যার কয়েকটি উদাহরণ হলো – ১২, ৩৪, ৫৩, ৩৪, ৫৬ ,৬ , ৫, ৪৫৫, ৫৬৬,…. এখানে এলোমেলো ভাবে আমি কিছু সংখ্যা লিখেছি প্রত্যেকেই স্বাভাবিক সংখ্যা।

স্বাভাবিক সংখ্যার সেট

স্বাভাবিক সংখ্যার সেট কে N দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। স্বাভাবিক সংখ্যার সেটকে নিম্নে তুলে ধরা হল-

N = { ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮,….}

স্বাভাবিক সংখ্যা কয়টি

স্বাভাবিক সংখ্যার সংজ্ঞা থেকে জানতে পেরেছি ,১ থেকে শুরু করে অসীম পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যার বিস্তার। সেহেতু স্বাভাবিক সংখ্যা কয়টি এই প্রশ্নটি ভুল। স্বাভাবিক সংখ্যার শুরুতো আছে কিন্তু শেষ নেই।

নিম্নে ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যা গুলি তুলে ধরা হল – ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭, ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৫, ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩, ৮৪, ৮৫, ৮৬, ৮৭, ৮৮, ৮৯, ৯০, ৯১, ৯২, ৯৩, ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭, ৯৮, ৯৯, ১০০.

স্বাভাবিক সংখ্যার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • ০ স্বাভাবিক সংখ্যা নয়,
  • সবচেয়ে ছোট স্বাভাবিক সংখ্যা ১,
  • প্রথম জোড় স্বাভাবিক সংখ্যা ২
  • প্রথম মৌলিক জোড় স্বাভাবিক সংখ্যা ২,
  • স্বাভাবিক সংখ্যার সেটকে N দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।

স্বাভাবিক সংখ্যার ব্যবহার

ধনাত্মক পূর্নসংখ্যাকে স্বাভাবিক সংখ্যা বা প্রাকৃতিক সংখ্যা বলা হয়। প্রাকৃতিক সংখ্যাকে আমরা বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করে থাকি। প্রাকৃতিক সংখ্যা ব্যবহারের কিছু উদাহরণ নিম্নে তুলে ধরা হল –

  • বস্তুর সংখ্যা গণনা করতে স্বাভাবিক সংখ্যা ব্যবহার করা হয়।
  • দৈর্ঘ্য ,প্রস্থ , সময় ইত্যাদি পরিমাপ করতে ব্যবহার করা হয়।
  • সমীকরণ ও অসমতা সমাধানের জন্য স্বাভাবিক সংখ্যা ব্যাবহার করা হয়ে থাকে।

এছাড়া ও স্বাভাবিক সংখ্যার অসংখ্য ব্যবহার রয়েছে। এখানে আমি কেবলমাত্র স্বভাবিক সংখ্যা ব্যবহারের কিছু উদাহরণ তুলে ধরেছি।

স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি নির্ণয়ের সূত্র

স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি নির্ণয়ের সূত্র টি হল = n(n+1)/2

এখানে n হল মোট নম্বরের সংখ্যা অর্থাৎ কতগুলো সংখ্যার সমষ্টি নির্ণয় করতে বলা হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ , প্রশ্নে বলা হয়েছে প্রথম ১০ টি স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি নির্ণয় কর ?
উত্তর : এখানে না= ১০
এখন আমরা n -এর মান সূত্রে বসিয়ে ক্যালকুলেশন করলেই সমষ্টি পাওয়া যাবে
১০(১০+১)÷২= (১০×১১)÷২ = ৫×১১ = ৫৫

কিন্তু আমি তোমাদের বলবো স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি নির্ণয়ের জন্য কোন সূত্র মুখস্থ করার প্রয়োজন নেই। আমি যে কাজ টি করতে বলবো সেই কাজটি করবে।

যত গুলো স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি নির্ণয় করতে বলবে ,তার সঙ্গে পরের সংখ্যা গুন্ করে ২ দিয়ে ভাগ করলেই স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি বের হয়ে যাবে।

উদহারণ : প্রথম ১০০ টি স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি নির্ণয় কর?

উত্তরঃ ১০০ এর পরের সংখ্যা ১০১ দিয়ে ১০০ কে গুন্ করে ২ দিয়ে ভাগ করলেই সমষ্টি বের হয়ে যাবে। অতএব ,প্রথম ১০০ টি স্বাভাবিক সংখ্যার সমষ্টি = (১০০×১০১)÷২ = ৫০৫০

আশাকরি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে এবং এর সমন্ধে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন স্বাভাবিক সংখ্যা হলো সেইসব পূর্ণসংখ্যা যা আমরা গণনার কাজে বা ক্রম নির্দেশ করতে ব্যবহার করে থাকি। স্বাভাবিক সংখ্যা মানুষের ব্যবহার করা সবচেয়ে আদিম সংখ্যা পদ্ধতিগুলোর একটি। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিনের গণনার কাজে এই সংখ্যাগুলো ব্যবহার করে থাকি।

আরও পড়ুন : সার্থক অংক ও সহকারি অংক কাকে বলে ?

Leave a Comment